নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বর মাসে গণভোট চেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এছাড়া পিআর পদ্ধতিতে (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) সংসদ নির্বাচনের জন্যও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রস্তুতি রাখতে বলেছে দলটির পক্ষ থেকে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসী ভোটারদের নিয়ে কথা হয়েছে। এনআইডির পাশাপাশি জন্মসনদ দিয়েও প্রবাসীরা ভোট দিত পারবেন, ইসি এমন জানিয়েছে। আমরা সব মিলিয়ে সেটিসফাই। ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও জালভোট রোধে এনআইডির ভিত্তিতে ভোট নেওয়ার কথা বলেছি। তারা ছবিসহ ভোটার তালিকার কথা বলেছেন। কর্মকর্তা নিয়োগে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথা বলেছি।’
জামায়াত এই নেতা বলেন, ‘বৈঠকে পিআর (সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন) নিয়ে কথা বলেছি। বর্তমান পদ্ধতিতে ৫৪ বছরে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করে নাই। এতে দিনের ভোট রাতে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই দুইটি পদ্ধতির প্রস্তুতির কথা বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণভোট নিয়ে দুটো আলোচনা আছে। সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট একসঙ্গে হওয়ার ব্যাপারে কোনও কোনও দলের মত আছে। আমরা বলেছি আলাদা করার জন্য, যেহেতু আলাদা বিষয়। যদি আলাদাভাবে হয় এটার জন্য প্রস্তুতি যেন রাখে।’
তিনি বলেন, ‘সমস্যা যেটা হবে প্রত্যেকে জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বিষয়েই মনোযোগ দেবে। কাজেই ওটা প্রাধান্য পাবে না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে কোথাও ভোট দখল হলে ওটাও দখল হবে। আমরা আলাদাভাবে করার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছি। একসঙ্গে হলে সময়ের বিষয়ও আছে। উনারা বলেছেন সরকার যেটা সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটা বাস্তবায়ন করবো।’
গণভোট আলাদা হলে খরচের একটা বিষয় আছে, এ বিষয়টি উত্থাপন করা হলে নায়েবে আমির বলেন, ‘এটা তো খুব সিম্পল। কাজেই বড় ধরনের ব্যয় হবে না। ব্যালট বাক্স তো ওটাই থাকবে। শুধু ব্যালট, খাওয়া-দাওয়া এসবের ব্যয় হবে। এটা বললে স্থানীয় ভোটসহ সব একসঙ্গে হতে হবে।’
আলাদা হলে তো ভোট কম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং যে সময় আছে এতে কোনও প্রভাব পড়বে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, একই দিন গণভোট হলে রিফর্মসের ইস্যু মাইনাস হয়ে যাবে। কারণ সবাই নিজের দলের প্রার্থীকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। আরেকটা ভোটের জন্য তাকে ভোটারকে চাপাচাপি করবে। বরং আলাদা হলে মানুষ ভোট দেবে। আবার ঝামেলা হলে আমরা তো জেনে যাবো। আর এক সঙ্গে দু’টো ভোট হলে এবং ঝামেলা হলে আম ছালা দু’টোই যাবে। আমরা নভেম্বরে গণভোট করার জন্য বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অতীতে অনেকগুলো গণভোট হয়েছে। ২১ দিন, ১৭ দিনের তফাতেও গণভোট হয়েছে। এখানে মার্কা নেই, মিছিল মিটিংয়ের কিছু নেই। তাই সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হলে কোনো সমস্যা হবে না।’
পিআর বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে এক্সিকিউশন হচ্ছে এমন বিষয় উল্লেখ করে তাহের বলেন, ‘এটা সিদ্ধান্তের বিষয়। ইসি বলছে সরকার সিদ্ধান্ত নিলে যা যা করা প্রয়োজন আমরা সক্ষম আছি। তারা সে হিসেবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
লটারিতে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের বিষয়টি যেন লটারির মাধ্যমে হয়, যাতে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। সরকার বলেছে, তারা সেইভাবে করবে। আমরা জোর দিয়েছি যেন এটা বাস্তবায়িত হয়। নির্বাচন তারিখ ঘোষণা হলে এটি কমিশনের অধীনে চলে আসবে— আমরা অনুরোধ করেছি যেন তারা একই পদ্ধতি অনুসরণ করেন।’
কমেন্ট বক্স